ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

কলাপাড়া উপকূলে 

গোলের গুড় তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে দুই শতাধিক পরিবার  

  গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:১৩  
আপডেট :
 ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:২১

গোলের গুড় তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে দুই শতাধিক পরিবার  
গোলের গুড় তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে দুই শতাধিক পরিবার। ছবি: প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপকূলে গোলের রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু গুড়। আর এ গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে উপকূলের অন্তত: দুই শতাধিক পরিবার। তাই গোলের গুড় তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতি বছর পতিত জমিতে হাজার হাজার গোল চারা রোপণ করছে উপকূলীয় বন বিভাগ।

সমুদ্র উপকূলবর্তী উপকূলীয় এলাকার জোয়ার-ভাটা প্রবাহমান পতিত জমিসহ ডোবা নালায় প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য গোলপাতার বাগান। প্রায় শত বছর ধরে এ গোল গাছের রস দিয়ে গুড় তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে কলাপাড়া উপকূলের দুই শতাধিক পরিবার। পৌষ, মাঘ ও ফাল্গুন মাসে গোলগাছ থেকে রস সংগ্রহ করে চাষীরা। প্রতিদিন বিকালে গাছের ডগা কেটে মাটির হাড়ি পেতে রাখা হয়। পরের দিন সকালে হাড়ি থেকে রস সংগ্রহ করে তা জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় গুড়। কোন ধরনের ক্যামিকেল ছাড়া গরম গুড় একটি পাত্রে রেখে তৈরি করা হয় উন্নতমানের গুড়। প্রতি কেজি গোলের গুড় বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে।

নীলগঞ্জের গোলচাষী বিধান চন্দ্র মিস্ত্রী বলেন, দিনকে দিন গোলের গুড়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগে আমাদের গুড় বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হতো। এখন মোবাইলে বিভিন্ন এলাকা থেকে যোগাযোগ করে বাড়ি থেকে গুড় নিয়ে যায়।

চাষী নির্মল চন্দ্র মৃধা বলেন, আমাদের নিকট থেকে ২’শ টাকা দরে কিনে নিয়ে একটি গ্রুপ অনলাইনে ৪’শ থেকে সাড়ে ৪’শ টাকা দরে বিক্রয় করছে। কিন্তু ক্রেতারা সরাসরি আমাদের নিকট থেকে ক্রয় করলে ২’শ টাকায় পাবে। তবে গোলের গুড়ের চাহিদা বাড়লেও দিন দিন বাগান কমে যাচ্ছে। জলবায়ু পরির্তনসহ নানা কারণে গাছ মরে যাচ্ছে।

কৃষকদের দাবি, গোলের গুড় স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এ গুড় খেলে ডায়াবেটিকস বৃদ্ধি পায় না, মানব দেহের গুড়াকৃমি দমন থাকে। উপকূলের খালগুলো খনন করে জোয়ার ভাটার পানি প্রবাহ বৃদ্ধি করতে পারলে গোলগাছের নতুন বাগান সৃষ্টি হবে। ফলে গোলের গুড়ের উৎপাদন আরও বাড়বে। একসময় দেশের চাহিদা পূরণ করে গোলের গুড় বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন চাষিরা।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্র্মকর্তা এ আর এম সাইফুল্লাহ বলেন, এ উপজেলায় ৬৫ হেক্টর জমিতে গোলগাছের বাগান রয়েছে। গোলগাছ থেকে দুই শতাধিক পরিবার রস আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকার গুড় বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গোলগাছের বাগান হারিয়ে যাচ্ছে। গোলগাছের বাগান বৃদ্ধির জন্য বনবিভাগ ও পানিউন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়ে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।

পটুয়াখালী উপকূলীয় বিভাগীয় বন কর্র্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, গোলগাছ হচ্ছে একটি অর্থকরী বনজ ফসল। আমরা ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে উপকূলের বিভিন্ন এলাকার পতিত জমিতে ৩০ হাজার গোলের চারা রোপণ করেছি। চলতি বছরে আরও ২০ হাজার চারা রোপণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত